ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

রাইড শেয়ার চালকদের কর্মবিরতি

সার্জেন্টের মামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে মোটরসাইকেলে আগুন 

অনলাইন ডেস্ক :: 

ট্রাফিক আইন অমান্য করার অভিযোগে পুলিশ মামলা দেওয়ায় শওকত আলম সোহেল নামে এক ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হয়ে নিজেই নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরের আগে রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে এ ঘটনা ঘটে।

ভিডিওতে দেখা যায়, মোটরসাইকেলটিতে আগুন জ্বলছে। পাশের লোকজন ছুটে এসে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। এই ঘটনাটির ভিডিওটি পোস্ট করে লিখেছেন, মনের কষ্টে গ্যাসলাইট দিয়ে নিজেই আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন শওকত আলম সোহেল নামে ওই ব্যক্তি।

জানা গেছে, আগে থেকেই ওই মোটরসাইকেলটিকে একটি মামলা দেওয়া ছিল। কাগজপত্রে ‘সামান্য ত্রুটি’ থাকায় পুলিশ ফের মামলা দেওয়ায় মনের কষ্টে তিনি এই ঘটনাটি ঘটান।

তবে মামলা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন গুলশান ট্রাফিক জোনের ডিসি রবিউল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, তার বাইকের নামে মামলা দেওয়ার জন্য কাগজপত্র নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মামলা দেওয়া হয়নি। তার আগেই তিনি তার মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
তিনি আরও বলেন, বাড্ডার লিংক রোডে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। সেখানে যা চলাচল স্বাভাবিক করতে রাস্তার পাশে রাখা মোটরসাইকেলগুলো সরানোর জন্য বলা হয়। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় মামলা দেওয়ার জন্য তাদের কাগজপত্রগুলো নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে বাড্ডা থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, ওই ব্যক্তি রাজধানীর লিংক রোড এলাকায় ট্রাফিক আইন অমান্য করায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ তাকে মামলা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মোটর সাইকেলে আগুন লাগান তিনি।

এ বিষয়ে এ বিষয়ে বাড্ডা থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ট্রাফিক আইন অমান্য করায় দায়িত্বরত এক ট্রাফিক সার্জেন্ট তাকে একটি মামলা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় মোটরসাইকেলটির আগুন নেভায়।

আবুল কালাম আরও বলেন, মোটরসাইকেলটি এবং ওই চালককে আমরা থানায় নিয়ে এসেছি। তাকে আটকের জন্য আমরা থানায় নিয়ে আসিনি বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ার জন্য নয়। তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি তার ক্ষুব্ধ হওয়ার আসল কারণ কী এবং কেন তিনি এমন করেছেন।

তাৎক্ষণিকভাবে ওই ব্যক্তির নাম ছাড়া আর কিছু জানা যায়নি। তার নাম শওকত আলম সোহেল। কী কারণে তিনি নিজের মোটর সাইকেল আগুন দিলেন সে বিষয়ে তার কাছ থেকেও কিছু এখনও শোনা সম্ভব হয়নি।

পুলিশি হয়রানির কারণে শওকত আলী ত্যাক্ত-বিরক্ত ও হতাশায় এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে অ্যাপ-বেইজড ড্রাইভারস ইউনিয়ন অব বাংলাদেশ (ডিআরডিইউ)।

পুলিশি হয়রানির বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে মঙ্গলবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ডিআরডিইউ।

সোমবার দুপুরে ডিআরডিইউ’র সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘বাড্ডার ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। হয়রানির জন্য একজন চালক তার মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনাও যদি পুলিশকে নাড়া না দেয়, তাহলে কি আত্মহুতি দিলে তাদের বিবেক নাড়া দেবে?’

রাইড শেয়ারিং অ্যাপের চালকরা যত্রতত্র স্থানে দাঁড়িয়ে যানজটের সৃষ্টি করে – ট্রাফিক পুলিশের এমন অভিযোগের জবাবের বেলাল আহমেদ বলেন, ‘গাড়ি কোথাও ব্রেক করলেই সেখানেই ধরে ফেলে পুলিশ। সরকার আমাদের জায়গা নির্ধারণ করে দিক। তাহলে আমরা যত্রতত্র দাঁড়াব না। আমাদের শহর অনুযায়ী যতটুকু জায়গা দেওয়া যায় ততটুকু দেওয়া হোক। যদি ১০টা স্পট দেওয়া হয়, আমরা সেই ১০টাতেই দাঁড়াব।’

ছয় দফার বিষয়ে ডিআরডিইউ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা কয়েক দফা জানিয়েছি, কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের গ্রহণ করেনি। আমরা ষষ্ঠবারের মতো আন্দোলনে যাচ্ছি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবো। কোনও ভায়োলেন্সে বিশ্বাসী না।’

পাঠকের মতামত: